ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫ , ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
বিএনপি নেতা ফারুকের বক্তব্য মিথ্যা-ভিত্তিহীন-জামায়াত দুই দলের সংস্কার প্রস্তাব জমা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৩ শতাংশ -উদ্বেগে উদ্যোক্তারা বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে এনবিআর : এনবিআর চেয়ারম্যান চার বিসিএস নিয়ে সিদ্ধান্ত জানালো পিএসসি আত্মপরিচয়ে পহেলা বৈশাখ উজ্জ্বল উপাদান-তারেক রহমান পহেলা বৈশাখ বাঙালীর মহা ঐক্যের দিন -জিএম কাদের প্রত্যেকে নিজ নিজ উপায়ে, রীতি অনুযায়ী পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবেন-প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক মোহাম্মদপুরে সাঁড়াশি অভিযানে ১২ জন গ্রেফতার কদমতলীতে গরম তেল ঢেলে স্ত্রীকে হত্যা স্বামীর মৃত্যুদণ্ড হাঁকডাক করে বিনিয়োগ সম্মেলনের সুবিধা পাবে না বাংলাদেশÑ এবি পার্টি চাঞ্চল্যকর আছিয়া ধর্ষণ মামলায় আদালতে চার্জশিট সরকারের মেয়াদ দীর্ঘ করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে- প্রিন্স ভাড়ায় উড়োজাহাজ না পাওয়ায় ছোট হচ্ছে বিমানের বহর নিঝুমদ্বীপে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অব্যবস্থাপনা, ব্যর্থ টাস্কফোর্স রিজার্ভে উন্নতি, নিট রিজার্ভেও আশার আলো : বাংলাদেশ ব্যাংক তিন মাস ধরে বন্ধ ইয়াংগুন টেকনাফ সীমান্ত বাণিজ্য ইউক্রেনে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ২১ ইউক্রেনের সুমি শহরে রুশ হামলায় নিহত ২০: জেলেনস্কি
* মেঘনা আলমের গ্রেফতার প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি-আইন উপদেষ্টা

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক ৭১৮৪ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ

  • আপলোড সময় : ১৪-০৪-২০২৫ ১২:৫৬:৪০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-০৪-২০২৫ ১২:৫৬:৪০ পূর্বাহ্ন
রাজনৈতিক হয়রানিমূলক ৭১৮৪ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া ৭ হাজার ১৮৪টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এ সময় তিনি বলেন, মেঘনা আলমের বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে, উনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে যে প্রক্রিয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটা সঠিক হয়নি। গতকাল রোববার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে হওয়া রাজনৈতিক হয়রানিমূলক ৭ হাজার ১৮৪টি মামলা আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। একটা মামলা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে অনেক কাগজপত্র প্রত্যাহার করতে হয়। অনেক সময় এমন মামলা আছে যেগুলো রাজনৈতিক হয়রানিমূলক নয়। তিনি বলেন, অনেকে অনেকভাবে নাম ঢুকিয়ে দেয়। প্রতিনিয়ত আমাদের আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন। তারা অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করছেন। এর চেয়ে দ্রুত কাজ করা সম্ভব কী না আমার জানা নেই। এরপরও আমরা আরও কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে এটাকে আরও দ্রুততর করার চেষ্টা করছি। ৫০ হাজার থেকে এক লাখ রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য এসেছে বলে জানিয়েছেন আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সরকারের মেয়াদের মধ্যে অন্তত ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারব। তিনি আরও বলেন, মাগুরায় শিশু আছিয়া ধর্ষণ ঘটনা ঘটেছিল। এরই মধ্যে পুলিশ চার্জশিট প্রস্তুত করেছে। আইজিপি অফিস এটা পর্যালোচনা করছে। আমি আশা করছি চার্জশিট আজই আদালতে দাখিল করা হবে। তিনি বলেন, আমরা যে আইনগত পরিবর্তন এনেছি, চার্জশিট দাখিল করার পর ৯০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করতে হবে। আমরা যেহেতু ফরেন্সিক ও ডিএনএ রিপোর্ট পেয়েছি, ডিএনএতে আলামত মিলেছে, আমার ধারণা এ বিচার কাজ আরও আগে, অনেক দ্রুত গতিতে শেষ হবে। এটা আমার ধারণা ও আশাবাদ। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামিন হলে খালি বলা হয় আইন মন্ত্রণালয় কি করছে বা আসিফ নজরুল কি করছে! সাংবাদিকদের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষকে জানাচ্ছি যে প্লিজ আপনারা বিনীতভাবে বোঝার চেষ্টা করলে আমি খুব খুশি হব। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বৈষম্যবিরোধী বিভিন্ন মামলায় যে জামিন হয়েছে, আমরা সেগুলোর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখেছি প্রায় সব মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন দেয়া হয়েছে। আপনারা জানেন হাইকোর্ট সম্পর্কে কোন ব্যাখ্যা বা মন্তব্য করার এখতিয়ার আমাদের নেই। তিনি বলেন, আগাম জামিন দেয়ার পর হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী জামিনপ্রাপ্তরা কেবল অধস্তন আদালতে বেইল বন্ড দাখিল করেন। এ ক্ষেত্রে অধস্তন আদালত যে কাজটি করেছে সেটি হলো আগাম জামিনের মেয়াদ যখন শেষ হয় পুনরায় জামিন চাইতে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই আবেদনটাকে খারিজ করে তাদেরকে জেলে প্রেরণ করা হয়েছে। অধস্তন আদালত থেকেও জামিন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে যারা জামিন পেয়েছেন তারা এফআইআর বা এজহারভুক্ত আসামি নন।
শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনের ক্ষেত্রে চারটি জিনিস ঘটেছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, তারা আগের আমলে জামিন পেয়েছিল, এখন বেইলবন্ড নিয়ে বের হয়ে গেছে। অধিকাংশ জামিন হাইকোর্ট থেকে হয়েছে। এই জামিনগুলোর অনেকগুলো আপিল বিভাগে বাতিল হয়েছে। তিনি বলেন, নিম্ন আদালত থেকে কিছু কিছু জামিন হয়েছে, এটা শোনার পর আমরা হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করার চেষ্টা করেছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বের হওয়া ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা যায়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রেফতার করা গেছে। আপনাদের সঙ্গে আমি একমত, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের জামিন আমাদের আরেকটু গভীরভাবে বিবেচনা করে দেয়া উচিত। আলোচিত অনেকের জামিন হলেও পরবর্তীতে আপিলে তা বাতিল হয়েছে বলেও জানিয়েছেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এ যে এত জামিন দেয়া হচ্ছে এই ব্যাপারটা প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগ অবগত আছেন। আমার ধারণা এ বিষয়ে উপযুক্ত করণীয়, তারা আমাদের থেকে ভালো বুঝেন তারা ব্যবস্থা নেবেন। এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইন বা অন্যান্য নিবর্তনমূলক আইনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বিচার বিভাগীয় যে সংস্কার কমিশন আছে তাদের প্রতিবেদনের অপেক্ষা করছি। আপনারা জানেন রাজনৈতিক ঐকমত্য কমিশনে আলাপ হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের দিকে যাচ্ছি। প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এটা প্রবাসীদের অধিকার। এ বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার ছিল। ১৫ বছর একটা সরকার ক্ষমতায় থেকে এটা করতে পারেনি। এটা সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারাধীন বিষয়। তারা বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা করে দেখছেন- পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে দেয়া যায় কী না, ডিজিটাল মাধ্যমে দেয়া যায় কী না, প্রক্সি ভোট দেয়া যায় কী না। আমার মনে হচ্ছে তারা ডিটারমাইন্ড। তারা কোনো না কোনো প্রক্রিয়ায় সীমিতভাবে হলেও এটা করতে বদ্ধপরিকর। আগামী নির্বাচন সামনে রেখেই এটা তারা বলেছেন।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মেঘনা আলমের বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। উনার বিরুদ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে যে প্রক্রিয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটা সঠিক হয়নি। তিনি বলেন, মডেল মেঘলা আলমকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিটেনশন দিয়েছিল। এটা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে মিটিং করেছি, এ বিষয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ও অন্যদের বক্তব্যের বিষয়ে আমরা সচেতন আছি। তিনি আরও বলেন, মেঘনা আলমের বিষয়ে কিছু তদন্ত পুলিশ করছে। উনার বিরুদ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে যে প্রক্রিয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটা সঠিক হয়নি। উনার যদি কোনো অপরাধ থাকে, সেই অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এটা আমরা স্বীকার করছি, গ্রেফতারের প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি। ঠিক হয়নি মানে উনার (মেঘনা আলম) বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা আলামত নেই, এটা নয়। সেরকম কিছু আছে, সেটার পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় কী, সেই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মেঘনা আলমের সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে জড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ হচ্ছ- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইন উপদেষ্টা বলেন, এটি নিয়ে আমরা কোনো আলোচনা করিনি। মেঘনা আলমের ঘটনার কারণে সৌদি আরবের শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা- জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, মিডল-ইস্টে একমাত্র সৌদি আরবে আমাদের শ্রমবাজার পুরোপুরি উন্মুক্ত আছে। কিছু কিছু দেশে গত সরকারের সময়েই শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে। সৌদি আরব আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু শ্রমবাজার নয়, কত মানুষ সেখানে হজ করতে যায়। এ ছাড়া আমাদের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে সৌদি আরবের বিরাট ভূমিকা রয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স